বিনোদন প্রতিবেদকঃ সম্প্রতি শিল্পকলা একাডেমীতে ‘দেশ’ নাটকের নিত্য পুরাণ এর প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া ও নাট্যকর্মীদের প্রতিবাদ সভায় হামলার কারনে বর্তমানে নাটক পাড়াতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। শিল্পকলার মঞ্চে অভিনয় হতে বিশিষ্ট নাট্যজন মামুনুর রশীদকে সাময়িক দুরুত্বে থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন একাডেমীর মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। একুশে পদকপ্রাপ্ত মামুনুর রশীদ এমন অনুরোধ উষ্মা, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

কিংবদন্তি কথায় জানা যায়, ‘শিল্পকলার ডিজি সাহেব ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি আমাকে জানিযে়ছেন, আমি যাতে শিল্পকলায় অভিনয় না করি। “রাঢ়াঙ” নাটকের ২০০তম প্রদর্শনী হযে়ছে। এখন আমাকে বলা হচ্ছে, এই নাটকে যেন অভিনয় না করি। কারণ, হিসেবে তিনি ছাত্র আন্দোলনের সময় দেওয়া ২৪ জন বিশিষ্টজনের একটি বিবৃতির কথা জানিযে়ছেন। আমি কিন্তু সম্প্রতি শিল্পকলা একাডেমিতে “ময়ূর সিংহাসন” নাটকে, মহিলা সমিতির মঞ্চেও অভিনয় করেছি, তাতেও কোনো সমস্যা হয়নি। শিল্পকলা একাডেমির অসুবিধার জায়গাটা কোথায়? অবশ্যই অসুবিধার একটা জায়গা আছে। কারণ হলো “নিত্যপুরাণ”কে তারা বন্ধ করেছে, পরে এর প্রতিবাদ সভায় আমার ওপর হামলা করেছে। পরদিন আমাদের শো ছিল, কিন্তু তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলাম। তখন থেকেই এই কথাগুলোর সূচনা হলো, আমি যদি অভিনয় করি তাহলে হামলা হবে।’
বিশিষ্ট এই নাট্যশিল্পীর অভিনয় থেকে বিরত থাকা প্রসঙ্গে, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, ‘আমি মামুনুর রশীদকে নিজে ফোন করে তাদের “রাঢ়াঙ” নাটকের শো করতে বলেছিলাম। এই নাটকটি করা দরকার। এই নাটকে উনি ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। তাকে অনুরোধ করেছি, সেই চরিত্র যদি অন্য কাউকে দিয়ে করানো যায়। কারণ, আপনি যেহেতু আন্দোলনের সময় রাজাকার নিয়ে কিছু বলেছিলেন, এটা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ, কষ্ট আছে। আপনি গেলে মানুষের সেই কষ্টটা বাড়বে। সেই জন্য আপনি ছাড়া যদি নাটকটির প্রদর্শনী সম্ভব হয়, এটা আপনি দেখেন।’
এই গুণী শিল্পী উষ্মা জানিয়ে বলেন, ‘আমি কি অভিনয় করতে পারব না! আমার কোনো অপরাধ নেই, অথচ আমাকে অভিনয় করতে দেবে না। রাজাকার স্লোগান নিয়ে ২৪ জন বিশিষ্টজন বিবৃতি দিয়েছিলেন, সেখানে আমার নাম ছিল। ওই বিবৃতিতে কী অপরাধ আছে? এখন তো বলা হচ্ছে, আপনারা কথা বলেন। সেই কথাই বলতে পারব না? এমন একটা সময় চলে এসেছে এই বাংলাদেশে, একটি মহল তো চাচ্ছেই শিল্পসাহিত্য-সংস্কৃতি বন্ধ হয়ে যাক। আমাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি, “রাঢ়াঙ” আমরা করব না, “কোম্পানি”ও করব না। চলুক যত দিন এই ব্যবস্থা চলে।’