রেল ধর্মঘটে স্থবির জনজীবন, যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে

166
Print Download PDF

অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের (গার্ড, লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার, সাব লোকোমাস্টার, টিটিই) পূর্বঘোষিত ধর্মঘটের কারণে সারাদেশে রেলযোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এই ধর্মঘটের ফলে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন, বিশেষ করে যারা বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার জন্য কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে ভিড় করেছেন। রেল চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের মধ্যে হতাশা ও বিষণ্ণতা দেখা দিয়েছে।

যাত্রীদের দুর্ভোগ

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা বৃদ্ধা মমতাজ বেগম জানান, তিনি রেল বন্ধ থাকার খবর জানতেন না। সকালে ৭০০ টাকা খরচ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে কমলাপুর স্টেশনে এসে তিনি রেল বন্ধ থাকার খবর জানতে পারেন। এখন তিনি কিভাবে ময়মনসিংহ যাবেন তা নিয়ে চিন্তিত।

বিকল্প ব্যবস্থা

যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে রেলের বিকল্প হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ রেল রুটগুলোতে বিআরটিসি বাস চালু করা হয়েছে। কমলাপুর রেলস্টেশনে একে একে বিআরটিসি বাস এসে পৌঁছাতে শুরু করে। বাস কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন জেলার যাত্রীদের আলাদা আলাদা বাসে তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। যাত্রীরাও তাদের পছন্দসই জেলার বাসে উঠে বসতে শুরু করেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় ১৩টি রুটে বাস ছেড়ে যায়। খালি বাসগুলো যাত্রী পরিপূর্ণ হলেই ছেড়ে যাবে বলে জানা যায়। বাস কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীদের দুর্ভোগ না কমা পর্যন্ত তাদের এই সেবা চালু থাকবে।

ঢাকা রেলস্টেশন ও বিমান বন্দর রেলস্টেশন থেকে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা তাদের ক্রয়কৃত রেল টিকিটের মাধ্যমে এই ভ্রমণ করতে পারবেন। একইভাবে এসব স্থান থেকে ঢাকায় এই সার্ভিসের মাধ্যমে আসতেও পারবেন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বাস সার্ভিস চালু থাকবে।

ধর্মঘটের কারণ

মূল বেতনের সাথে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে রেল ধর্মঘট চলছে। এই ধর্মঘটের কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে রংপুর থেকে আন্তঃনগর ট্রেন, লোকাল ও মেইলসহ সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

জানা গেছে, সোমবার মধ্য রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেনসহ বিভাগের জেলাতে যাতায়াতকারী সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রীরা ট্রেনের অপেক্ষায় ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশনে অপেক্ষা করছেন।

এর আগে মূল বেতনের সাথে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে রেলওয়ে রানিংস্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারীর ডাকে অনির্দিষ্টকালের রেল ধর্মঘট শুরু হয়েছে।

এই ধর্মঘটের কারণে যাত্রীদের যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তা সত্যিই বেদনাদায়ক। আশা করা যায়, সরকার এবং রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাবেন।