“নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে বাধ্য করতে চাই না-জামায়াত আমির”

169
ছবি- সংগৃহীত
ছবি- সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দলটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে কোনোভাবে বাধ্য করতে চায় না। তিনি বলেন, “তিনি আমাদের প্রতিপক্ষ নন, বরং সরকারের অভিভাবক। আমাদের সকলের দায়িত্ব তাঁকে সহযোগিতা করা।”

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, “আগে নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে, ফলে জনগণ ভোট বিমুখ হয়েছে। এবার এমন একটি নির্বাচন হতে হবে যেখানে প্রকৃত জনমতের প্রতিফলন ঘটবে। নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য।”

তিনি আরও বলেন, “চলতি মাসেই যদি নির্বাচন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করা যায়, তাহলে আগামী মাসেই একটি রোডম্যাপ প্রকাশ করা যেতে পারে। এ রোডম্যাপ যেন জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হয়।”

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, “গত কয়েক দিনের ঘটনায় আমরা বিচলিত না হলেও সতর্ক আছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামীর নীরব থাকা সমীচীন নয়। জাতিকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”

তিনি সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে এক সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমেই সংকটের সমাধান সম্ভব। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছি।”

আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, “এই বিচার কার্যক্রম এখনো জনমানুষের কাছে দৃশ্যমান নয়। এটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হওয়া উচিত। বিচার বিভাগের নির্ভুল ও নিরপেক্ষ ভূমিকা জনগণ প্রত্যাশা করে।”

মানবিক করিডর ইস্যুতে জামায়াত আমির বলেন, “এটি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই এই বিষয়ে সরকার যেন সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। হঠকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত নয়।”

চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ বাণিজ্য এই বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে সরকারের উচিত হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া।”

সেনাবাহিনী নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেনাবাহিনী দেশের গর্বের প্রতিষ্ঠান। কোনো পদক্ষেপের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হোক, তা কেউ চায় না। সেনাবাহিনী নিয়ে অসাবধানতামূলক মন্তব্য করা উচিত নয়।”

শেষে ডা. শফিকুর রহমান সব রাজনৈতিক দলকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ভুল বোঝাবুঝির কারণে যদি জাতি আবারও সংকটে পড়ে, তাহলে তার দায় কেউ এড়াতে পারবে না।”