জাপানে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ শ্রমিক নেওয়া হবে।

120
ছবি- সংগৃহীত
ছবি- সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্কঃ জাপানে বাড়তে থাকা শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত এক লাখ শ্রমিক নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দেশটির সরকার ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।

আজ বৃহস্পতিবার টোকিওতে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ সেমিনার অন হিউম্যান রিসোর্সেস’ অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য জাপানে কাজের দরজা খুলতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, “আজকের দিনটি আমার জন্য অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ী। এটি শুধু কর্মসংস্থানের সুযোগ নয়, বরং জাপানকে জানার ও নতুন দিগন্তে পৌঁছানোর পথ খুলে দিচ্ছে।”

সেমিনারে বাংলাদেশ ও জাপানের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক সই হয়। একটির পক্ষ হলো বাংলাদেশ সরকারের ব্যুরো অব ম্যানপাওয়ার এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং (বিএমইটি) ও কাইকম ড্রিম স্ট্রিট (জাপান-বাংলাদেশ যৌথ প্রতিষ্ঠান)। অন্যটি বিএমইটি, জাপানের ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (যা ৬৫টিরও বেশি কোম্পানির একটি ফেডারেশন) এবং জেবিবিআরএ (জাপান বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি)-এর মধ্যে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের বিশাল যুব জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মক্ষেত্র তৈরি করাই সরকারের দায়িত্ব।”

জাপানের শিজুওকার কর্মপরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক মিতসুরু মাতসুশিতা জানান, অনেক জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে আগ্রহী, এবং এই প্রবণতা বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।

এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা স্মরণ করেন যে অধ্যাপক ইউনূস প্রথম জাপান সফরে নারীদের জন্য ক্ষুদ্রঋণ উদ্যোগ নিয়ে এসেছিলেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের তরুণ ও দক্ষ শ্রমিকরা দুই দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।”

ওয়াতামি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট মিকি ওয়াতানাবে জানান, বাংলাদেশে তাদের প্রতিষ্ঠিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর ১,৫০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, এবং ভবিষ্যতে তা ৩,০০০ জনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

জেইটিসিও (জাপান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইনি অ্যান্ড স্কিল্ড ওয়ার্কার কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন)-এর চেয়ারম্যান হিরোআকি ইয়াগি জানান, বাংলাদেশের তরুণদের সম্ভাবনা অনেক হলেও ভাষা শিক্ষকের অভাব একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নিকি হিরোবুমি বলেন, “দেশটিতে জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রয়োজনীয়তা বাড়বে। এটি দুই দেশের জন্যই ইতিবাচক সম্ভাবনার বার্তা বয়ে আনছে।”

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী জানান, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে শ্রমিক সংকট এক কোটিরও বেশি হতে পারে। বাংলাদেশ যদি এই সুযোগ কাজে লাগায়, তাহলে দক্ষ শ্রমিক রপ্তানির মাধ্যমে বড় সম্ভাবনার দরজা খুলে যেতে পারে। সূত্রঃ বাসস