মৌনতা মানে পরিত্রাণ নয়, এটি ধ্বংসের সিলমোহর

46

আলাদা করে ইরান কিংবা ফিলিস্তিন নয়- ইসলামই তাদের শত্রু, তুমি কি সেটা ভুলে গেছো?

নেতানিয়াহু যেন এ যুগের দাজ্জাল, ট্রাম্প যেন শাদ্দাদের আধুনিক ছায়া। ইয়াহুদিরা আজ ইয়াজিদের সৈন্য, অথচ মুসলিম উম্মাহর বুকে এখনো জাগেনি মাহদীর দীপ্তি কিংবা মসীহের প্রতিরোধ। ধিক সেই বিবেককে, যে নিস্তব্ধতায় শত্রুকে দাপটের সুযোগ দেয়।

হে মুসলিম নেতৃবৃন্দ! যদি আজও তোমরা শত্রু চিনতে ব্যর্থ হও, তবুও শত্রুরা কিন্তু একচুল ছাড় দেবে না। আজ তেহরান, কাল ইসলামাবাদ, পরশু ঢাকা—ধ্বংসের এই স্নায়ুযুদ্ধ থেমে নেই। ইসরাইল মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়া, দক্ষিণ এশিয়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি বিষবৃক্ষ ইসরাইলের পরম বন্ধু। তোমাদের উদাসীনতা ও আত্মভ্রান্তিই আজ সবচে বড় বিপদ।

ক্ষমতাকেন্দ্রিক দুনিয়ায় ধর্মকে অস্ত্র বানিয়ে শত্রু তৈরি করে খেলা চলে। ফিলিস্তিন নিঃশেষ হলে, ইরান পতন ঘটালে কি ইসরাইল থেমে থাকবে? না। তাদের ক্ষুধা আরও বেড়ে যাবে। সেই অস্ত্র, সেই পরিকল্পনা, সেই ষড়যন্ত্র—পরবর্তী নিশানা হবে তুমি, তোমার ঘর, তোমার সন্তান।

আজ সৌদি নীরব, কাতার-কুয়েত মুখে কুলুপ এঁটেছে, জর্ডান পশ্চিমাদের ছায়ায় আশ্রিত। আগামী পঞ্চাশ বছরের মধ্যে এদের প্রত্যেকেই গাজার মত হাহাকার করবে—এই ভবিষ্যদ্বাণী আজ নয়তো কাল সত্য হবে।

এক সময় হয়তো হজ্ব করতে যেতে হলেও মুসলিমদের ইসরাইলের অনুমতি লাগবে—এই আশঙ্কা এখন কল্পনা নয়, আগাম সংকেত মাত্র।

নেতানিয়াহু ইতিহাসের দ্বিতীয় হিটলারে রূপ নিচ্ছেন। জায়নবাদ এখন কেবল রাজনৈতিক শক্তি নয়, এটি এক বৈশ্বিক মতাদর্শ—ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করে একটি নির্ধারিত নীতিহীনতা প্রতিষ্ঠার এজেন্ডা। মুসলিম দেশগুলো ভাবছে, “আমি তো আক্রান্ত হইনি”—এই আত্মপ্রবঞ্চনাই হবে তাদের পতনের মূল সূত্র।

ইসরাইল-আমেরিকার আসল লক্ষ্য শুধু ফিলিস্তিন বা ইরান নয়—তাদের মূল টার্গেট ইসলাম। আজ মোদির ভারত, পুতিনের রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র—সব এক সুতোয় গাঁথা। কারো হাতে বুদ্ধি, কারো হাতে অস্ত্র, কারো হাতে অর্থ। এবং প্রত্যেকের হাতে মুসলমানের রক্ত।

ইসলামকে পরাজিত করে মুসলিমদের দাস বানিয়ে রাখাই এদের লক্ষ্য। তারপর একে অপরকে খেয়ে ফেলা শুরু করবে তারা। এখন এই অস্থায়ী ঐক্যের মূল এজেন্ডা একটাই—ইসলামকে থামানো।

এখন চলছে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। একদিকে মুসলমানদের মিডিয়ার মাধ্যমে আকৃষ্ট করছে ভোগবাদের দিকে, অন্যদিকে ইসলামের ভেতরে ঢুকিয়ে দিচ্ছে বিকৃত চিন্তা, বিকৃত ধার্মিকতা। ইসলামের ছদ্মবেশে কতিপয় বিকৃতমনা আজ তারই আদর্শ বিক্রি করে ধনী হচ্ছে।

একদিন আমরা প্রশ্ন করতাম—ওসামা বিন লাদেন এত উগ্র কেন? তালেবান-আল কায়েদা এত আক্রমণাত্মক কেন? আজ উত্তরটা পরিস্কার। যখন ইরানে বোমা পড়ে, তখন আফ্রিকার কোনো তরুণের রক্ত টগবগ করে। গাজায় শিশুর কান্না পৌঁছে যায় বাংলার কোনো নারীর অন্তরে। এমন পরিস্থিতি একজন মুসলিম তরুণকে ‘উগ্র’ করে তোলে—তাকে আগে বোঝো, তারপর বিচার করো।

যে শিশু জন্মেই দেখে বাবা-মা বোমায় উড়ে গেছে, সে যদি পৃথিবীকে ধ্বংস করতে চায়, তার মধ্যে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে ওঠে—তাহলে পৃথিবী আগে তার বিচার করতে পারে না।

পশ্চিমারা যাদের মুখে মানবাধিকারের বুলি, তাদের হাতে রক্ত লেগে থাকে নিরপরাধ নারী ও শিশুর। ওরা ফেরাউন-নমরুদকেও হার মানিয়েছে। মুখোশ খুলে গেছে বহু আগেই।

ধিক্কার জানাই এদের দ্বিচারিতা ও শঠতাকে। মুসলমানদের এখন সিংহের মতো বাঁচতে হবে। বেড়ালের মত লেজ গুটিয়ে পাঁচশো বছর বাঁচায় কোনো গৌরব নেই।

হে মুসলিম তরুণেরা, জাগো! খোরাসানের কাফেলায় শামিল হও। সামনে দুটি পথ:

মরবে, না হয় মারবে—এর বাইরে আর কোনো বিকল্প নেই।

রাজু আহমেদ,  প্রাবন্ধিক।  

raju69alive@gmail.com