ঢাকা-আমিরাত একসঙ্গে কাজ করবে ভিসা সমস্যা সমাধানে: লুৎফে সিদ্দিকী

110
ছবি- সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্কঃ বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সামগ্রিক পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে ভিসা সমস্যা সমাধানে একযোগে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক-বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। তিনি বলেন, উভয় দেশ বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং জনগণের চলাচল সংক্রান্ত বিষয়ে পারস্পরিক সদিচ্ছা ও আস্থার ভিত্তিতে সম্পর্ক জোরদারে একযোগে কাজ করে যাবে।

১৬ জুন (সোমবার) ইউএই-এর ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্টস সিকিউরিটি (ICP)-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সুহেইল সাঈদ আল খাইলির সঙ্গে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া এক পোস্টে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, “মেজর জেনারেল সুহেইলের সঙ্গে একটি দীর্ঘ, খোলামেলা ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।”

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, “গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আরব আমিরাতে ভিসা ও আবাসন নীতিমালার সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘনকারী হিসেবে বাংলাদেশিরা পরিচিত। আমিরাতে মোট ভিসা লঙ্ঘনকারীদের মধ্যে ২৫ শতাংশেরও বেশি বাংলাদেশি।”

তিনি বলেন, এই সমস্যার মূল কারণ সম্ভবত বাংলাদেশে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিহিত এবং এটি এক ধরনের ‘দুষ্ট চক্র’ তৈরি করেছে। বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বৈধ অভিবাসন ব্যয় তুলনামূলক বেশি, যা তাদের প্রাপ্ত বেতনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

তিনি স্বীকার করেন, “বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ সরকার অপরাধমূলক আচরণের মূল কারণগুলো মোকাবেলায় তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। ভিসা নীতিতে কিছু সময়ের জন্য শিথিলতা আসার পর এর অপব্যবহার বেড়েছে, কিন্তু সরকার সেসব দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।”

বিশেষ দূত জানান, শুধু ভিসার মেয়াদ শেষে থেকেই অনেকে নিয়ম লঙ্ঘন করছে না, বরং ভুয়া সনদপত্র তৈরি করাও একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব সনদ কখনো কখনো সরকারি স্বীকৃতিসহ উপস্থাপন করা হয়। আমিরাতে অভিবাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে এমন একটি রিক্রুটমেন্ট ফার্মের সঙ্গে আলাদা আলোচনাতেও অভিযোগগুলোর সত্যতা নিশ্চিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের মার্চে আংশিকভাবে ভিসা চালুর পর মধ্যস্বত্বভোগীদের কিছু অসাধু আচরণের তথ্যও তিনি পেয়েছেন।

ভবিষ্যতে বিভিন্ন ভিসা যেমন—পরিবার ও দম্পতির জন্য, নিয়োগকর্তা পরিবর্তন, পর্যটক ভিসা, দক্ষ কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট এবং নাবিকদের জন্য নির্ধারিত ভিসা—বিষয়ক নীতিমালা আরও সুসংহত করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, “এই মুহূর্তে আমাদের সবার উচিত অনিয়মের মূল কারণ চিহ্নিত করে তা দমনে আরও কার্যকরভাবে কাজ করা। এসব অনিয়ম দীর্ঘমেয়াদে আমাদের সম্মান ও সুযোগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”