শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক ওএসডি

104

বিশেষ প্রতিনিধি শরীয়তপুর : শরীয়তপুরের বিতর্কিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) আশরাফ উদ্দিনকে ওএসডি করা হয়েছে।

শনিবার (২১ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (উপসচিব) হিসেবে বদলি পূর্বক পদায়ন করা হলো।

এর আগে, শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের একটি আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওটিতে তার সঙ্গে এক নারীকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখা যায়। এ নিয়ে জেলাজুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এরপর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আশরাফ উদ্দিন।

শুক্রবার (২০ জুন) সকালে প্রবাসী সাংবাদিক জাওয়াদ নির্ঝর তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ডিসির সঙ্গে এক নারীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের কিছু ছবি প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে ভিডিওটি প্রকাশ করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে আশরাফ উদ্দিন দাবি করেন, আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ওই নারী ঘনিষ্ঠতা স্থাপন করেন। ডিসি হিসেবে পদায়নের পর ওই নারী আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। নানাভাবে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন। বিভিন্ন সময় ঘুমের ঔষধ ও নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে আমার ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হতো।

ব্ল্যাকমেইল করে প্রতি মাসে টাকা হাতিয়ে নিত। তাকে প্রতিমাসে টাকা দিতে হতো। তাকে পূবালী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা হতে তার একাউন্টে টাকাগুলো দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকবার টাকা দেওয়ার ডকুমেন্ট রয়েছে। সর্বশেষ তিনি চাপ দিতে থাকেন আমার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করতে হবে। নয়তো একটি বড় অংকের টাকা দিতে হবে। তার ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় টাঙ্গাইলের কিছু সংবাদকর্মী ও আইনজীবীদের ওই ছবি ও ভিডিও সরবরাহ করেন।

এছাড়া শরীয়তপুরের এক আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে টাকা আদায় করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। ব্যক্তিগত ও সংবেদনশীল ছবি জনসম্মুখে প্রকাশ করার অধিকার কেউ রাখে না। এ কারণে ওই নারীর বিরুদ্ধে আমি আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারি।

ওই নারী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ডিসি আশরাফ উদ্দিন আমার ননদের স্বামী ছিলেন, তাদের সংসার জীবনে সমস্যা চলছিল। সে সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি আমার বাসায় আসতেন। এর পর থেকেই তার সঙ্গে আমার কথা হতো। এর পর প্রেমের সম্পর্ক হয়। তারপর আশরাফ উদ্দিন তাকে বিয়ের কথা বলে স্বামীর সঙ্গে ডির্ভোস করিয়েছেন, সংসার ভেঙ্গেছেন। এখন বিয়ে না করে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। ঘুমের ঔষধ খেয়ে, নেশা করে, আত্মহত্যা করার ভয় দেখিয়ে তার প্রতি আমাকে দুর্বল ও আসক্ত করেন। এক বছর ধরে আমাদের সম্পর্ক চলছে। বিয়ের জন্য বললে আমার ছবি ও ভিডিও সে ভাইরাল করে দিবে এমন হুমকিও দিয়েছেন।’

টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া ৫৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, জেলা প্রশাসক শার্টের বোতাম খোলা অবস্থায় এক নারীর সঙ্গে অসংযত রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, ভিডিও কলের মাধ্যমে ওই নারীকে আপত্তিকর কিছু দেখানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্মরত ছিলেন। ০৫ অগাস্টের পর তিনি শরীয়তপুরের ডিসি নিয়োগ পান। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তা আশরাফের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে।