দায়সারা ভদ্রতা বলতে আমরা বুঝি সেই ধরনের আচরণ বা সৌজন্য যা আন্তরিকতা ও গভীরতা ছাড়া শুধু আনুষ্ঠানিকতা বা দায় পালনের উদ্দেশ্যে করা হয়। এটি একটি লোক দেখানো ভদ্রতা যা আন্তরিকতা ও আগ্রহের অভাবে হালকা বা অগভীর হয়ে থাকে।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কেউ হয়তো কারো সাথে দেখা হলে “কেমন আছেন?” জিজ্ঞেস করলো, কিন্তু এরপর আর কোনো আগ্রহ বা মনোযোগ না দেখিয়ে কেবল দায়সারাভাবে উত্তর নিল। অথবা, কোনো অনুষ্ঠানে গিয়ে কেবল উপস্থিত থাকার জন্য যাওয়া, যেখানে আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ বা কারো সাথে মিশে যাওয়ার কোনো চেষ্টা নেই। এই ধরনের আচরণকে “দায়সারা ভদ্রতা” বলা হয়।
এটি সাধারণত হয়ে থাকে আন্তরিকতার অভাবে: হয়তো ঐ ব্যক্তির সেই মানুষের প্রতি আন্তরিক অনুভূতি নেই, তাই ভদ্রতাটা দায়সারাভাবে পালন করে। কখনোবা সময় ও আগ্রহের অভাবে ব্যস্ততা বা আগ্রহের অভাবে অনেকে বিস্তারিতভাবে ভদ্রতা প্রকাশ করতে পারে না। অথবা অনুষ্ঠানের গুরুত্ব না বোঝে কোনো অনুষ্ঠানে হয়তো ব্যক্তির গুরুত্ব বা তাৎপর্য বুঝতে না পারার কারণে দায়সারাভাবে অংশ নেয়া। কখনো বা
সামাজিক চাপে অনেক সময় সামাজিক প্রথা বা রীতিনীতি রক্ষার জন্য দায়সারাভাবে ভদ্রতা পালন করতে হয়।
“দায়সারা ভদ্রতা” কখনো কখনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কারণ এটি এক ধরনের ভণ্ডামি বা লোক দেখানো আচরণ। যেমন আন্তরিক হাসী নয় দাত দেখানো হাসি।ভদ্রতা without sincerity হলো দায়সারা ভদ্রতা।
শেষকথা আন্তরিক না হয়ে আধুনিক হওয়ার একটি স্বভাবজাত রুপ হলো দায়সারা ভদ্রতা।
লেখক ড.মুহম্মদ ইদ্রিছ ভূইয়া
সাবেক কনসালটেন্ট এডিবি এন্ড ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপ। লেখক ও কলামিস্ট
