অবৈধ অস্ত্র শনাক্ত করার অভিযান চলছে

60
ছবি- সংগৃহীত

প্রধান প্রতিবেদকঃ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৫ হাজারের বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এসব লাইসেন্সের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দলটির নেতা-কর্মী ও সমর্থক ব্যবসায়ীদের দেওয়া হয়েছিল। অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশনার পর কাগজপত্র যাচাই করে অসংগতি ধরা পড়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

নিরাপত্তা বিভাগ জানিয়েছে, সরকারের নির্দেশে জমা পড়া এবং জমা না পড়া অস্ত্রগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে – অনেক লাইসেন্সে জালিয়াতি, ভুল তথ্য ও অনিয়ম রয়েছে। ৭ হাজারের বেশি অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি। পুলিশ এসব অস্ত্রধারীদের খুঁজতে বাড়ি বাড়ি গেলেও অধিকাংশকে পাওয়া যায়নি – কেউ আত্মগোপনে, কেউ বিদেশে চলে গেছেন।

দেশে বর্তমানে বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার, যার মধ্যে ৪৬ হাজারের বেশি লাইসেন্স ব্যক্তির নামে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নামে রয়েছে প্রায় ৮ হাজার ২০০ টি লাইসেন্স, বিএনপির নামে রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫০০ টি, আর অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের নামে মাত্র ৭৯ টি।

গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় এবং বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যারা অস্ত্র জমা দেবেন না, তাঁদের লাইসেন্স বাতিল ও অস্ত্র অবৈধ বলে গণ্য হবে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি, ময়মনসিংহে সবচেয়ে কম সংখ্যক লাইসেন্স রয়েছে। জমা না দেওয়া অস্ত্রধারীদের তালিকা থানায় পাঠানোর পরও অধিকাংশ অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি। বহু নেতা-কর্মী উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র কিনেছিলেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে লাইসেন্স নিয়েছিলেন। অনেকে এই অস্ত্র ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ভয় দেখাতেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রভাব দেখানোর সংস্কৃতি রাজনীতিতে গভীরভাবে প্রবেশ করেছে। এ থেকে বের হতে হলে আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অত্যন্ত জরুরি।

আইজিপি বাহারুল আলম বলেছেন, যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অস্ত্র জমা দেননি, তাঁদের কাছে থাকা অস্ত্র এখন অবৈধ। এসব অস্ত্র শনাক্ত করে অভিযান চালানোর কাজ চলছে।