নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বাংলাদেশের প্রখ্যাত আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী প্রয়াত এম আই ফারুকীর স্মরণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করা হয় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এবং এম আই ফারুকী অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের যৌথ উদ্যোগে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হক। তিনি বলেন, এম আই ফারুকীর হাত ধরেই দেশে জনস্বার্থ মামলার কার্যক্রম ও বিচারিক সক্রিয়তার (জুডিসিয়াল অ্যাকটিভিজম) বিকাশ ঘটে। বিশেষ করে পরিবেশ রক্ষায় টু-স্ট্রোক ইঞ্জিনচালিত যানবাহন নিষিদ্ধকরণ, শিশু অধিকার সুরক্ষা, যৌনকর্মীদের উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত অনুশীলনের সংস্কারে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
সভাটি সঞ্চালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও ব্লাস্টের নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন। এতে আরও বক্তব্য রাখেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জমির উদ্দিন সরকার ও এম কে রহমান, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মিলন।
বক্তারা ফারুকীর কর্মজীবনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরেন। তারা বলেন, তিনি শুধু একজন দক্ষ আইনজীবী ছিলেন না, ছিলেন একজন পথপ্রদর্শকও, যিনি মানবাধিকার ও সাংবিধানিক আইনের চর্চায় অনন্য অবদান রেখে গেছেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে তাঁর দৃঢ় অবস্থানের কথাও সভায় উল্লেখ করা হয়।
এম আই ফারুকী ২০২৫ সালের ৩ মে রাত ১০টার দিকে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি ছিলেন একজন প্রথিতযশা আইনজীবী ও লেখক, যিনি জনস্বার্থে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার পাশাপাশি আইনি বিষয়ের উপর কয়েকটি গবেষণাধর্মী গ্রন্থও রচনা করেছেন। তার রচিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে:
* *Law of Abandoned Property*
* *Citizenship and Nationalities in Bangladesh*
* *Interpreting Vested Property Law in Bangladesh: A Comprehensive Review*
সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এম আই ফারুকীর চলে যাওয়া দেশের আইন অঙ্গনে এক অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি করেছে, তবে তাঁর কাজ ও চিন্তাধারা আগামী প্রজন্মের পথ দেখাবে।