
ইখতিয়ার হোসেন রিপন বিশেষ প্রতিনিধিঃ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢুকলেই দেখা যাই দেশের কোনো তারকা বলছেন, ‘ঘরে বসে পুঁজি ছাড়াই আয় করতে চান? তাহলে এই অ্যাপে গেম খেলুন আর জিতে নেন লাখ লাখ টাকা।’বাংলাদেশে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচারণা চলছে সিকে৪৪৪
এই অ্যাপের ব্যাপকভাবে প্রচারণা করছেন তরুণেরা। যেখানে লোভনীয় অফার ও অ্যাপে খেলার নিয়ম প্রচার করছে। আদতে এটি জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এর প্রচারণা চলছে এবং অনলাইনে জুয়া খেলতে আগ্রহ বাড়াচ্ছে। এই অ্যাপে এন্ট্রি নেওয়া এক জন প্রতিবেদককে বলেন, অনলাইন জুয়া খেলে তিন দিনে আয় করেছেন ২৯ হাজার টাকা। তবে ছয় মাসে হারিয়েছেন ২ লাখ টাকা। এরকমভাবে অর্থ হারানোর প্রবণতাই বেশি। অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছেন অনলাইন জুয়ার আসরে।
অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে ঢাকা সহ সব জেলা গুনাতে বাড়ছে আত্মহত্যা, সামাজিক অপরাধ ও ঋণের বোঝা

অনলাইন জুয়ার আসক্তি ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধসহ সব বয়সীরা এমনকি নারীরাও অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। লোভে পড়ে খুয়াচ্ছে টাকা-পয়সা ও সহায়-সম্বল। জুয়া’য় সর্বস্ব হারিয়ে হতাশায় আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। জুয়ার মাধ্যমে মোবাইল অ্যাপস নিয়ন্ত্রণকারীদের কাছে পাঁচার হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রীতিমতো প্রকাশ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জুয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে জুয়ার অ্যাপসের প্রচারণা চলছে। চটকদার এসব বিজ্ঞাপণে প্রলোভিত হয়ে ঝাপিয়ে পড়ছে অনলাইনে টাকা উপার্জনের নেশায়।ঋণগ্রস্ত হয়ে বাড়ি ছাড়া ও দাম্পত্য কলহের বেশকয়েকটি ঘটনা পর্যক্ষেণ করা গেছে।

জানাগেছে, টিকে-৭৭৭, জয়া-৯৯৯, ক্যাসিনো-৭৭৭, হাউজ অব ফান, স্টার স্লট, লাকি স্পিন স্লট, ওয়ান এক্স বেট, লুডো কিং, তিন পাত্তি গোল্ড, ২৯ গোল্ড কার্ড গেম, বেট কুইন, ৩৬৫ বেটসহ অসংখ্য জুয়ার অ্যাপে আসক্ত হয়ে পড়ছে সব বয়সের মানুষ। এসব অ্যাপসে বিকাশ ও নগদ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হয়। সোশ্যাল মিডিয়ার চটকদার বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করা হয় জনপ্রিয় তারকা, ক্রিকেটার, রাজনৈতিক নেতার ছবি।
জুয়া খেলতে গিয়ে গরু বিক্রি করে, জমি বন্ধক রাখে ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা জুয়া’য় লাগিয়ে নষ্ট করে অবশেষে ঋণের বোঝার চাপে আত্মহত্যা করে।
আনারুল ইসলাম নামে এক যুবকে এই প্রতিবেদককে বলেন, শুনেছিলাম মোবাইলে খেলা করে অনলাইনে টাকা উপার্জন করা যায়। সেই জন্য জুয়ার অ্যাপস মোবাইলে নিয়ে খেলতে শুরু করি। এখন আমি নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।
তবে এসব এলাকায় অনেক কিশোর ছেলেরা জুয়া খেলে মোটরবাইক কেনাসহ বিলাসি জীবন যাপন করছে। তাদের উপার্জনের উৎস মানুষ জেনে জুয়াতে আরও উৎসাহিত হয়ে পড়ছে। সীমিত কয়েকজন জুয়াড়ি লাভবান হলেও বেশির ভাগ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ নেয়া জরুরী না হলে খুব অল্প সময়ে ধংশ হয়ে যাবে দেশের যুব সমাজ।