ঢাকার উত্তরা ‘গ্রিন বেল্ট’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ডিএনসিসি প্রশাসক

101

ইখতিয়ার হোসেন রিপন বিশেষ প্রতিনিধিঃ বৃক্ষ ও প্রাণীকুল একে অপরের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রাণীদের বেঁচে থাকার প্রধান ও মূল উপকরণ হ’ল অক্সিজেন, যা বৃক্ষ থেকেই উৎপন্ন ও নির্গত হয়। প্রত্যেক নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে প্রাণীজগৎ কার্বনডাই অক্সাইড বর্জন করে।

এটি এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বৃক্ষ সেই দূষিত কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহণ করে এবং প্রাণীকুলের বেঁচে থাকার মূল উপাদান অক্সিজেন নিঃসরণ করে। তাই গাছ লাগান, পরিবেশ বাচাঁন কার্যক্রমের আওতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, উত্তরা এলাকায় পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় পুরো অঞ্চলকে ‘গ্রিন বেল্ট’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ লক্ষ্যে কমিউনিটির সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে আজ (১৭ জুলাই) ২০২৫ উত্তরা তৃতীয় পর্যায়ের দিয়াবাড়ি লেকপাড়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

ডিএনসিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি বর্ষায় পাঁচ লাখ গাছ রোপণের পরিকল্পনা নিয়ে তিন মাসব্যাপী একটি বৃহৎ বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গাছগুলো রোপণ করা হবে শহরের সড়ক বিভাজক, খালপাড়, পার্ক, কবরস্থান, খেলার মাঠ ও নিম্নআয়ের মানুষের বসবাসকারী এলাকায়।

প্রশাসক বলেন, “ঢাকার জলধারা ফিরিয়ে আনতে খাল ও নদীর দুই পাশে প্রায় ৫০০ কিলোমিটারজুড়ে পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ সম্ভব। এটি জলবায়ু সহনশীল ঢাকা গড়তে সহায়তা করবে।”

আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের অর্থায়ন ও পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন সেভারসের সহায়তায় আয়োজিত এই কর্মসূচিতে হিজল, বট, কদম, নিম, জামসহ ৫০০টি দেশীয় গাছের চারা রোপণ করা হয়। গাছগুলোর পরিচর্যার দায়িত্বে থাকবে গ্রিন সেভারস।

অনুষ্ঠানে আইডিএলসি ও গ্রিন সেভারসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, নগরবাসীর সম্পৃক্ততার মাধ্যমে এই উদ্যোগ একটি টেকসই পরিবেশ রক্ষার মডেল হয়ে উঠবে। বৃক্ষের পরিচর্যা করতে হবে। তাতে করে মানবজাতি ও প্রাণীকুলের বৃহত্তর কল্যাণ সাধিত হবে।

এছাড়াও ভারসাম্যপূর্ণ ও দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে বৃক্ষরোপণ তথা বনায়নের বিকল্প নেই। গাছবিহীন পৃথিবী এক মুহূর্তও অসম্ভব। মানুষের যাপিত জীবনের সব কিছুই গাছকে ঘিরে। তাই গাছ নিধন হলে গাছ শুধু একাই মরে না। মানুষসহ প্রায় সব প্রাণসত্তার জন্যই তা ঝুঁকি ও উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একটি পূর্ণবয়স্ক বৃক্ষ বছরে যে পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করে, তা কমপক্ষে ১০ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের বার্ষিক অক্সিজেনের চাহিদা মেটায়। তাই বৃক্ষ রোপন ও এর পরিচর্যা উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ।