
সামাদ খান ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের নগরকান্দায় ভুয়া র্যাব পরিচয়ে ডাকাতি ও অপহরণের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ১০। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ভুয়া র্যাব জ্যাকেট, ওয়াকি-টকি, হাতকড়া, অস্ত্র সদৃশ্য গ্যাস লাইট ও ব্যবহৃত মাইক্রোবাস। এছাড়া তাদের দ্বারা অপহৃত স্বর্ণ ব্যবসায়ী দুই ভাইকেও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০-এর অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ভিকটিম জয়দেব আধ্য (৫৩) ও বিশ্বনাথ আধ্য (৫৭) সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে রাজধানীর তাঁতীবাজার থেকে জুয়েলারি তৈরির যন্ত্রাংশ কিনে সোমবার বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে তারা টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসে করে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানাধীন জয়বাংলা মোড়ে পৌঁছালে একটি মাইক্রোবাস এসে র্যাব পরিচয়ে বাস থামিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে মাইক্রোবাস থেকে র্যাব লেখা জ্যাকেট পরিহিত ৩-৪ জন ব্যক্তি বাসে উঠে দুই ভাইকে জোরপূর্বক নামিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। তাদের চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলা হয় এবং ভিকটিমদের কাছ থেকে নগদ ২,৭০০ টাকা ও যন্ত্রাংশ ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
ঘটনার পরপরই র্যাব-১০-এর একটি আভিযানিক দল জয়বাংলা মোড় এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে ভুয়া র্যাব পরিচয়ে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।একই সঙ্গে ভিকটিম দুই ভাইকেও উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন দিদার (২৯), মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মিন্টু গাজী (৪৫), মো. জামিল (৩২) এবং স্বপন খান (৪৫)।
এদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম ও স্বপন খান পালানোর সময় উত্তেজিত জনতার হাতে ধরা পড়েন এবং গণপিটুনির শিকার হন। পরে র্যাব সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪টি র্যাব লেখা জ্যাকেট, ৩টি র্যাব ক্যাপ, ২ জোড়া হাতকড়া, ১টি স্টানগান, ১টি পিস্তল সদৃশ্য গ্যাস লাইট, ২টি ওয়াকি-টকি সেট, পিস্তল কাভার, মোবাইল ফোন ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই রয়েছে একাধিক মামলা। দিদার এর বিরুদ্ধে রয়েছে ৮টি, মিন্টু গাজীর বিরুদ্ধে ৩টি, সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে। জামিল এর বিরুদ্ধে রয়েছে একটি হত্যা মামলা এবং স্বপন খানের বিরুদ্ধে রয়েছে চুরি, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার পাশাপাশি ৪টি হত্যা মামলা।
র্যাব-১০-এর অধিনায়ক বলেন, আন্তঃজেলা বাসে যাত্রার আগে ভিডিও ধারণ ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করলে এ ধরনের ঘটনা রোধ সম্ভব। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে কাউকে সন্দেহ হলে সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯-এ কল করতে বা নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করতে আহ্বান জানান তিনি।