নিউজ ডেস্কঃ রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার আলদাদপুর গ্রামে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে ২২টি হিন্দু পরিবারের উপর হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের উদ্যোগে গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজীব কুন্ডূ তপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, যুগ্ম মহাসচিব ডাঃ হেমন্ত কুমার দাস, বিশ্বনাথ মোহন্ত, নকুল চন্দ্র মণ্ডল, অ্যাডভোকেট শুভ মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর কুমার বর্মন, ঢাকা মহানগর সভাপতি শ্যামল ঘোষ, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি গৌতম সরকার অপু, হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক নিলয় পাল আদর, উৎপল ভৌমিক, শুভজিৎ চক্রবর্তী, সূর্য অধিকারী, ইমন ভক্ত প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ধারাবাহিক হামলা চালানো হচ্ছে। নাসিরনগর থেকে শুরু করে অভয়নগর, এখন রংপুরের গঙ্গাচড়া—সবখানে একই ধরনের হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়কে গ্রামছাড়া করা হচ্ছে।”
তারা অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার হিন্দু সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয় মূলধারার বাইরে রেখে চলেছে। সরকারি নিয়োগ ও সংস্কার কার্যক্রমে হিন্দুদের কোন প্রতিনিধিত্ব নেই। সাম্প্রতিক সময়ে যশোরের অভয়নগরের ডহরমসিয়াহাটি গ্রামে ২০টি হিন্দু বাড়িতে আগুন লাগানো ও লুটপাটের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গঙ্গাচড়ায় আবারও হামলা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, “যদি হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা না হয়, তবে ভবিষ্যতে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচনের দাবি ছাড়া আমাদের আর কোন পথ খোলা থাকবে না। হিন্দু জনগোষ্ঠী তখন আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না।”
সারাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় এই ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছে এবং ভবিষ্যতের জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে বক্তারা সতর্ক করেন।