মানবতার আন্তর্জাতিক দূত : আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়া

0
406

এক প্রগতিশীল, বিশ্বসংযুক্ত ও মানবিক নেতৃত্বের প্রতীক।

আধুনিক রাজনীতির পরিধি আজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক কূটনীতি, মানবিক নেতৃত্ব ও বৈশ্বিক অংশগ্রহণে বিস্তৃত। এই পরিসরে আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়া এমন এক নাম, যিনি ব্যবসা, সমাজসেবা ও রাজনীতিকে একত্রিত করে মানবিক ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছেন। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ব্যবসায়ী ও মানবিক নেতার পাশাপাশি তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সক্রিয় সদস্য হিসেবে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করতে নিরলস ভূমিকা পালন করছেন।

২০২০ সালের করোনা মহামারির অচিন্তনীয় সংকটে যখন সারা বিশ্ব স্থবির, তখন আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়া চিকিৎসা সহায়তা, খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান—শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তার কার্যক্রম ছিল অত্যন্ত লক্ষণীয়। নাইজেরিয়ার ওইও স্টেটের তৎকালীন গভর্নর সিনেটর আবিওলা আজিমোবি করোনায় আক্রান্ত হলে নাইজেরিয়া সরকার সরাসরি তাঁর সহায়তা কামনা করে এবং শর্ত দেয়—বাংলাদেশে তৈরি বিশেষ করোনা প্রতিরোধী ইনজেকশনটি যেন তাঁর মাধ্যমেই পৌঁছে দেওয়া হয়।

তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সহায়তায়, বিশ্বব্যাপী আকাশপথ বন্ধ থাকা সত্ত্বেও নাইজেরিয়ার একটি বিশেষ বিমান বাংলাদেশে এসে তাঁর কাছ থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। সঙ্গে সীমিত সংখ্যক পিপিই, মাস্ক ও সুরক্ষা সামগ্রীও পাঠানো হয়। এই ঘটনা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হয়, যা শুধু তাঁর ব্যক্তিগত সক্ষমতার স্বীকৃতিই নয়, বরং এক বাংলাদেশির মানবিক নেতৃত্বের গৌরবময় দৃষ্টান্ত।

পানি সংকটের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়া বিশ্বাস করেন—বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মিঠা পানির ভাণ্ডারসমৃদ্ধ বাংলাদেশ ‘ব্লু গোল্ড ইকোনমি’র কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তিনি বোতলজাত পানি রপ্তানি, পানি কূটনীতি এবং জলবায়ু সহনশীল পানি অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের সুপারিশ করেছেন। তাঁর এই ভিশন বাংলাদেশকে বৈশ্বিক পানি সমস্যার অংশগ্রহণকারী নয়, বরং সমাধানদাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

জলসম্পদ সংরক্ষণের পাশাপাশি তিনি বায়ুদূষণ রোধেও সক্রিয়। জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প ব্যবহার, নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসার ও নগরাঞ্চলে সবুজায়ন—এসব বিষয়ে তিনি আন্তর্জাতিক গবেষক ও পরিবেশ সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। এর মাধ্যমে তিনি পরিবেশ সংরক্ষণে যেমন অবদান রাখছেন, তেমনি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নতুন দিগন্তও উন্মোচন করছেন।

মানবিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের জনপ্রিয়তা প্রায়শই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাঁকে ও তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আজাদকে গুম করা হয়। দলীয় প্রতিবাদ ও সংবাদমাধ্যমের বলিষ্ঠ লেখনীর চাপে তিনি মুক্তি পান, তবে শারীরিক নির্যাতনের ফলে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন। পরে তাঁর হৃদপিণ্ডের দুটি ধমনীতে রিং প্রতিস্থাপন করতে হয় এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিতে হয়। শারীরিক কষ্ট সত্ত্বেও তিনি মানবিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবিচল থেকেছেন।

আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকাসহ—পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর সুদৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। এই বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে তিনি বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে কাজ করছেন।

ভূঁইয়া গ্লোবাল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দেশে-বিদেশে বহু সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। তাঁর ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিস্তৃত গার্মেন্টস, রিয়েল এস্টেট, আইটি এবং আমদানি-রপ্তানিসহ নানা খাতে।

তাঁর প্রতিষ্ঠান বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারী ও সরকারকে সঙ্গে নিয়ে খাতভিত্তিক উন্নয়ন ও সমস্যার সমাধানে কাজ করছে।

প্রগতিশীল, আন্তর্জাতিকভাবে সংযুক্ত এবং মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়া শুধু কসবা–আখাউড়া বা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুনামই বৃদ্ধি করতে পারবেন না, বরং বিএনপি ও বাংলাদেশের সম্ভাবনাকেও বহুগুণে প্রসারিত করতে সক্ষম হবেন। বর্তমান বিশ্বে যে নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক কূটনীতি, মানবিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়ন ভিশনে সমান দক্ষ—তিনি তার উজ্জ্বল উদাহরণ। তাঁর নেতৃত্ব জাতীয় রাজনীতিতে নতুন উচ্চতা আনতে পারে, যা দেশের জন্য এক অমূল্য সম্পদ।

লেখক: আলহাজ্ব কবীর আহমেদ ভূঁইয়া। রাজনৈতিক, উন্নয়ন কৌশলবিদ ও চেয়ারম্যান, ভূঁইয়া গ্লোবাল ফাউন্ডেশন।