পুরান ঢাকায় শাশুড়িকে কুপিয়ে জখম, মামলা নম্বর-১৪

0
116

নিজস্ব সংবাদদাতা: পুরান ঢাকার ইসলামবাগে শাশুড়ি মোছাঃ রুমা বেগমকে কুপিয়ে মারাত্মক জখমের ঘটনা ঘটেছে। আহত রুমা বেগম বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। এ ঘটনায় বাদী শাহ জালাল মোল্লা চকবাজার মডেল থানায় মামলা (নং-১৪, তারিখ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দায়ের করেছেন। মামলায় পাঁচজনকে অভিযোগ করা হয়েছে এবং কয়েকজন অজ্ঞাতনামা আসামিও আছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলা করা ব্যক্তিরা হলেন: ১) মোঃ রাকিব আকন (২৮), পিতা–আজাদ আকন, বর্তমান ঠিকানা: জিনজিরা, বাদাম গাছতলা, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা (১ নং আসামী),
২) মোঃ গোলাম হোসেন (৪০), পিতা–আবদুল হান্নান, ঠিকানা: এরশাদ কলোনি, চকবাজার, ঢাকা,
৩) তুষার আপন (৩০), পিতা–আজাদ আকন, ঠিকানা: জিনজিরা, বাদাম গাছতলা, কেরানীগঞ্জ,
৪) মোঃ নাইম আকন (৩০), ঠিকানা: পূর্ব ইসলামবাগ, মাওরা টেক, শিশি বোতল গলি, চকবাজার, ৫) আজাদ আকন (৫৫), পিতা–মোঃ শামসুদ্দিন আকন, ঠিকানা: ইসলামবাগ, মাওরা টেক, শিশি বোতল গলি, চকবাজার।

এ ঘটনায় বর্তমানে ১ নং আসামী রাকিব আকন ও ৫ নং আসামী আজাদ আকনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বাদী শাহ জালাল মোল্লা জানান, তিনি মুলত শরীয়তপুরের ব্যবসায়ী; তার স্ত্রী রুমা বেগম রাজধানীর পশ্চিম ইসলামবাগে ভাড়া ঘরে খাবার বিক্রি করেন। তাদের কন্যা (মোছাঃ) সেতু আক্তারের সঙ্গে ১০ বছর আগে রাকিব আকনের বিয়ে হয়েছে। বাদীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ১ নং আসামী রাকিব আকন তার ছেলের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন এবং টাকা চেয়ে চাপও দিতেন। বিষয়টি জানতে পেরে এলাকায় সালিশও হয়েছিল।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ দুপুর দেড়টার দিকে রাকিব ও তার সহযোগীরা দলবদ্ধভাবে সেতু আক্তারের ভাড়া ঘরে ঢুকে রুমা বেগমকে রাকিবের চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন। আঘাতে পেটে নাড়ি-ভুঁড়ি বের হয়ে গিয়েছিল এবং গোটা বাথরুম রক্তে ভেসে উঠেছিল। পরে ঘরের অন্যান্য স্বজনরা রুমাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসেন।

আহত রুমা বেগমের স্বামী বাদী শাহ জালাল মোল্লা বলেন, “রাকিব দীর্ঘদিন আমার মেয়েকে জ্বালাতন করত, টাকা দাবিও করত; আমার স্ত্রী টাকা না দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে এ ধরনের হামলা করেছে। আমি এর বিচার চাই।”

আসামীর স্ত্রী সেতু আক্তার আদালত জামিনও অস্বীকার করে বলেন, “রাকিব আমাকে নির্যাতন করত, বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা দাবি করত। ওই দিন আমার মাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। আমি তার সঙ্গে আর ঘর – সংসার করতে চাই না; রাকিবের ফাঁসি চাই।

শ্বশুর ও আহতের জীবদ্দশা পিতামাতা ও এলাকাবাসীও অভিযোগ করেছেন যে রাকিব প্রায়ই পারিবারিক বিবাদ ও টাকাপয়সার চাপ দিয়ে থাকলেও সালিশের মাধ্যমে শান্ত করা হয়েছে। আহত রুমা বেগমের পিতা মোঃ হোসেন সরদার বলেন, “আমার মেয়ে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে; যদি আল্লাহ না চান—তবে… একজন জামাই কী করে তার শাশুড়িকে এভাবে কুপিয়ে জখম করতে পারে?” তিনি সর্বোচ্চ বিচারের দাবি করেছেন।

চলমান তদন্তে চকবাজার মডেল থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আহত ও অভিযোগকৃত বিষয়ভিত্তিক বিস্তারিত তল্লাশি ও সাক্ষ্য সংগ্রহ চলছে এবং অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মামলা নং-১৪ ধারা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।