গুণে গৌরব, দোষে সংশোধন

0
177

দোষ ও গুণের সমন্বয়েই মানুষ। তাই অন্যের দোষ বড় করে না দেখে নিজের দোষগুলো চেনা এবং বদলানোর চেষ্টাই প্রকৃত আত্মউন্নয়ন। মানুষের মাঝে যদি কোনো গুণ চোখে পড়ে, সেটিকে নিজের ভেতর ধারণের চেষ্টা চলুক নিরবিচারে। এমনভাবে কথা বলা, আচরণ করা ও বিশ্বাস রাখা উচিত যাতে অনুপস্থিতিতেও মানুষ শ্রদ্ধায় স্মরণ করে।

উপকার করলে তা পুরস্কার হয়ে ফিরে আসে—তবে সবাই উপকরণ চায় না, অনেকেই চায় শুধু একটু ভালো ব্যবহার ও আন্তরিক হাসি। হৃদয় ছুঁয়ে দেওয়া আচরণ অনেক সময় অর্থের চেয়ে মূল্যবান হয়ে ওঠে।

নিজের দোষ বড় করে দেখুন। যে আচরণ বা কথা অন্যের কষ্টের কারণ হয়, তা এড়িয়ে চলাই মানবিক দায়িত্ব। প্রলোভন কিংবা প্ররোচনায় নিজের নীতিকে বিসর্জন দেওয়া নয়, বরং সহজ-সরল জীবনযাপনই মানুষের প্রকৃত সুখের পথ। পারিপার্শ্বিকতার বিষ যেন মনে সংক্রমণ না ঘটায়—এই মনোশক্তিই সুখের রক্ষাকবচ।

অন্যের ক্ষতি করলে বা সম্মানহানি ঘটালে তার প্রতিক্রিয়াও ফেরত আসে। উপকার যেমন উত্তরাধিকার তৈরি করে, তেমনি অপকারও রেখে যায় ছায়া। তাই সবার ভালো চাইতে চাইতে নিজের উপকারের পথও নির্মিত হয়।

অভিযোগের সংখ্যা কমালে শান্তির সুবাতাস বইবে। কে মূল্যায়ন করেছে আর কে করেনি, সেই হিসাব খুললে শান্তি হারায়। সমাজে নিজের স্বার্থকে উপেক্ষা করার মধ্যেই ব্যক্তিগত সুখ নিহিত। দায়িত্ববান মানুষকে একসময় পৃথিবী দায়িত্ব নিতে শেখে। তবুও যদি অবমূল্যায়িত হন, জানবেন—আপনার সততা ভুল ছিল না। প্রতিটি কাজের হিসাব হয়; তাই পুণ্যের পথে অবিচল থাকুন।

জীবনের একমাত্র নিশ্চিত পরিণতি মৃত্যু। তাই এমন জীবন চাই, যা অনুপস্থিতিতেও শ্রদ্ধায় স্মরণীয় হয়। ক্ষমতা থাকলেও যেন তা কারও ক্ষতির কারণ না হয়। প্রতিটি কাজে ও ব্যবহারে যেন অপরের মঙ্গল নিহিত থাকে। অন্যের দোষ খুঁজে কতদূর যাওয়া যায়? মানুষের পথ তো বহু দূরের।

সময়ের সাথে কেউ পাশে নাও থাকতে পারে, তবুও বিপক্ষের আচরণ আমাদের থামিয়ে দিতে পারবে না—ভালো কাজ অব্যাহত থাকুক। মানুষের অন্তর থেকে দোয়া আদায়ের মতো সাফল্য আর কিছু নয়।

খুঁতের শেষ নেই। কিন্তু খুঁতখুঁতে মানুষ কারও ঘনিষ্ঠ হতে পারে না। নিজেকে অসুখ নয়—এই সমাজের ওষুধে পরিণত করতে হবে। মানুষের ভালোবাসার চেয়ে বড় কিছু নেই। তাই দোষ ধরে নয়, ভালোবাসা দিয়ে হৃদয়ে পৌঁছাতে হবে। ক্ষমাশীলতা, সহনশীলতা এবং স্থির হাসিমুখে এগিয়ে চলার মাঝেই সুখের ধারাবাহিকতা গড়ে ওঠে।

দুঃখ এলে মুখোমুখি হোন, কারণ নদীর বাঁকের পরেই হয়তো সুসময় অপেক্ষায়। গুণগুলো হাইলাইট করুন—দেখবেন জীবন ধীরে ধীরে আলোকিত হয়ে উঠছে।

রাজু আহমেদ,  প্রাবন্ধিক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here